আমাদের বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের মানুষগুলোর কষ্টের কথা কেউ জানেনা। বাংলাদেশের নিভৃত পল্লী, অবহেলিত জনপদ বা প্রত্যন্তাঞ্চল বলতে যতগুলো গ্রাম/ইউনিয়ন রয়েছে তার মধ্যে মাদারীপুর জেলাধীন কালকিনি উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়ন অন্যতম। ইউনিয়নটির মধ্যদিয়ে প্রবাহিত আড়িয়ালখা নদী, পূর্বে শরীয়তপুরের গোসাইরহাট সেও এক বিশাল খাল দ্বারা দ্বিখন্ডিত বাঁশগাড়ি ইউনিয়ন।
এই বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের শেষ প্রান্তে যে গ্রামটি সে গ্রামেই জন্ম নিয়েছিলেন ৭০ এর নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে বিপুল ভোটে জয়লাভ করা এম সি এ (এম পি) বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম এডঃ মতিউর রহমান (বর্তমান খাসের হাট হাই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক প্রেসিডেন্ট মরহুম শফিজ উদ্দিন এর নাতি, খাসেরহাট তথা বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের সর্ব প্রথম শিক্ষা গুরু পণ্ডিত স্যারের গর্বিত কনিষ্ঠপুত্র এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নিউজিল্যান্ড নিবাসী হানিফ মাহমুদের চাচাত ভাই)।
এই মরহুম এডঃ মতিউর রহমান যিনি ৭০ এর নির্বাচনের পর ১৯৭১ এর পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হবার লক্ষে ভারতের চাদপাড়ায় "চাদপাড়া শরণার্থী শিবির" স্থাপন করে হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে আশ্রয় খাদ্য প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করেছিলেন। আমি নিজেও সে ক্যাম্পের একজন মুক্তিযোদ্ধা। দিন বদলে যায়, মানুষ ভুলতে শুরু করে সোনালী অথবা দুঃসময়ের অতীত। আমরাও ভুলে গেছি বীর মুক্তিযোদ্ধা এডঃ মতিউর রহমানের নাম এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অবদানের মহান ইতিহাস।
বলছিলাম অবহেলিত জনপদ বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের চির বঞ্ছিত অভাবী দুর্দশাগ্রস্থ বঙ্গবন্ধু ও নৌকা প্রেমী হতভাগা মানুষের প্রতিদিনের জীবনের করুন ইতিবৃত্ত।
সেই শিশুকালে গামছা পরে অথবা পানিতে সাতরিয়ে দূর দূরান্ত থেকে খাসের হাট স্কুলে অ আ ক খ পড়তে যেতাম। সকালে যেতাম আর সেই সন্ধায় ফিরতাম। না সড়ক, না গাড়ি, না নৌকা, সেতু, না সাঁকো কিছুই ছিল না। বিদ্যুতের তো প্রশ্নই ওঠেনা। দেশ স্বাধীন হয়েছে ৪৭ বছর। এই সবে মাত্র সৈয়দ আবুল হোসেনের শেষ মন্ত্রীত্বকালীন সময়ে কোন কোন গ্রামে পল্লী বিদ্যুতের আলো জ্বলেছিল।
১৭ বছর ইন্টারনেটে ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য ব্লগিং করছি কিন্তু দেশের বাড়ী যেয়ে বিদ্যুতের আলো চোখে দেখিনি। আর আমার জন্মস্থান দক্ষিন আকাল বরিশে মোটেই কোন সড়ক বা বাঁশের সাঁকোও ছিল না। কয়েক বছর আগে চেয়ারম্যান সালাম তালুকদারের বদৌলতে এবং সৈয়দ আবুল হোসেনের দয়ায় একটি সড়ক হয়েছে বটে। এখানে আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিমের কৃতিত্বের কিছু নেই; তিনি কিছুই করেন নি। শুধু মঞ্চে বড় বড় বক্তৃতা দিয়ে মাইক ফাটানো ছাড়া আমরা কিছু দেখিনি বা শুনিনি।
যেহেতু আমরা চির বঞ্ছিত। বঞ্চিত বিদ্যুৎ থেকে, সড়ক থেকে, ব্রীজ কাল্ভারট থেকে, সরকারী বেসরকারী সকল সাহায্য অনুদান থেকে; বঞ্ছিত মহান স্বাধীনতার ফসল থেকে। এর মূল কারনই ছিল যে মরহুম এডঃ মতিউর রহমানের পরলোকগমনের পরে কেউ আর আমাদের দিকে ফিরে তাকাননি।
এ বাঁশগাড়ি নিয়ে কেউ কোন ভালো সংবাদও কোন পত্র/পত্রিকা বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম/ টিভি মিডিয়ায় কোন কারনেই প্রচার করেনি। প্রচার করেছে মাত্র সেদিন আড়িয়াল খাঁ সেতু উদ্বোধনের সময়। এ সেতু নির্মাণে আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিমের কোন কৃতিত্ব নেই বা ছিল না। তিনি হঠাৎ বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনার দয়ায় সাংসদ হয়ে ঘোষণা দিলেন, তিনিই কালকিনি উন্নয়নের প্রবক্তা এবং রুপকার! কি অদ্ভূত ও তাজ্জব ঘটনা। নাসিম সাহেব শেখ হাসিনাকে খুশি করার জন্য আড়িয়াল খাঁ সেতুর নামকরন করলেন "শেখ লুতফর রহমান সেতু" । কত চমৎকার তোষামোদি ও তেল মালিশকরণীয় প্রথা! নেত্রীকে খুশি করার জন্য বংগবন্ধুর গর্বিত পিতা মাদারীপুরের তৎকালীন শিক্ষক শেখ লুতফর রহমানের নামে আড়িয়াল খাঁ সেতু নামকরনের যুক্তি কোথায়? কোথায় গোপালগঞ্জ এবং কোথায় বাঁশগাড়ি ইউনিয়ন?
অন্যদিকে বলতে গেলে যদিও শুনতে খারাপই লাগবে যে বাঁশগাড়ি ইউনিয়নে বঙ্গবন্ধুর গর্বিত পিতা মরহুম শেখ লুতফর রহমানের কি অবদান রয়েছে?
সেতো জাতিরজনকের পিতা এবং বাঙ্গালী জাতির ভাগ্যোন্নয়নে জীবনের সব কিছু বিলিয়ে দেয়া হতভাগিনী শেখ হাসিনার গর্বিত দাদাজান। এই নিভৃত পল্লী এলাকার এপার ওপার সংযোগের ক্ষেত্রে কেন সামান্য একটি সেতুর নামে তাঁর সন্মানিত নাম ব্যবহার করে আমরা তাকে আরো খাটো করছি? এ কথা কি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একবারো ভেবেছিলেন বা ভাববার অবকাশ ছিল অথবা ভাবতে দেয়া হয়নি !
চাটুকারীতা আজ এমন পর্যায়ে চলে গিয়েছে যে দেশ জাতি ও দেশের মানুষের চিন্তা চেতনা বুদ্ধি জ্ঞান রুচিবোধ ও স্বাভাবিক ইচ্ছে আবেগ অনুভূতির বাইরে গিয়ে সরকারী সিদ্ধান্ত মানুষের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। এ নিয়ে কেউ ভাবেনও না। সবাই খুব খুশি । কেউ ভাবছেন না যে আড়িয়াল খাঁ সেতুর নাম বঙ্গবন্ধুর পিতার নামে করার আদৌ কোন যুক্তিগত কারন আছে কি নেই?
এই ক্ষুদ্র সেতুটি হতে পারতো মহান স্বাধীনতার সফল সংগঠক, হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধা গড়ে তোলার কারীগর বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম এডভোকেট মতিউর রহমানের (এম সি এ -সংসদ সদস্য ) অথবা হতে পারতো এই বাঁশগাড়ি ইউনিয়নে/ খাসের হাটে ১৯৭১ সালে গ্রাম থেকে যুবকদের ডেকে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষন দেয়া এবং পরবর্তীতে ভারতে নিয়ে গিয়ে অস্ত্র হাতে দেশ স্বাধীন করার লক্ষে ঝাপিয়ে পরে জীবন দানকারী শহীদ মুক্তিযোদ্ধা মোঃ নুরুল হক শিকদার (বীর বিক্রম ) এর নামে । এখানে সৈয়দ আবুল হোসেন নিজে এই সেতু নির্মাণের সকল ব্যবস্থা / আয়োজন করে সেতু নির্মাণে সফল হলেও তিনি অনাহুতভাবে অযাচিত অহেতুক দুর্নাম ও মিথ্যা রোষানলের বলি হিসেবে চুপ করে থাকলেন।
সেতু নির্মাণের কৃতিত্ব উপর পর্যায়ে পৌছে গেল কালকিনি থেকে মাদারীপুরের বর্তমান বিনা ভোটে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিমের খাতায়।
বাহ রে স্বাধীনতা! বাহ রে হতভাগা বাঁশগাড়ি ইউনিয়নবাসী। বাহ
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমীপেষু
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঢাকা।
(বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মরহুম মতিউর রহমানের নামে করার আবেদন।)
বিষয়ঃ আড়িয়াল খাঁ সেতু নামকরণ প্রসঙ্গ
মহাত্মন,
আমি মাদারীপুর জেলাধীন কালকিনি উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়ন নিবাসী একজন সচেতন নাগরিক এবং একজন মুক্তিযোদ্ধা কণ্ঠশিল্পী ।
আড়িয়াল খাঁ নদীর তীরে শিশুকালা কৈশর ও যৌবন কাটিয়েছি। এতদাঞ্চলের গরীব কৃষক শ্রমিক জেলা তাতী শিল্পপতি ব্যবসায়ী রাজনীতিবীদ শিক্ষক ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার তথা সকল পেশা ও শ্রেণীর মানুষের একান্ত ইচ্ছা ও আকাংখার কথা ছোটকাল থেকেই উপলব্ধি করতাম এবং অনুভব করে সুখ দুখের ভাগি হবার চেষ্টা করতাম।
আড়িয়াল খাঁ নদীর ভাংগনে বিগত বছর গুলোতে নদীর দুই পারের হাজার হাজার কৃষক গৃহস্থ তাদের বাপ দাদার সহায় সম্বল ফসলি জমি ঘর বাড়ী ভিটে মাটি সম্পত্তি হারিয়েছে এই স্রোতস্বিনী আড়িয়াল খার ভাঙ্গনে ।
অন্য দিকে আমরা বাঁশগাড়ি ইউনিয়নবাসী মূলতঃ মাদারীপুর জেলাধীন হলেও আড়িয়াল খাঁ নদীর কারনেই আমরা চির বঞ্ছিত যোগাযোগ ব্যবস্থা থেকেও । মাদারীপুর জেলা থেকে সম্পূর্ণ আলাদা এ অবহেলিত ইউনিয়ন বাঁশগাড়ির জনগণকে সারা জীবন নৌকা এবং লঞ্চ ও ফেরি পারাপারের মাধ্যমে কালকিনি সদর ও মাদারীপুর যাতায়াত করতে হয়। ফলে এ ইউনিয়নের কোন ছেলে মেয়ে অতি নিকটে হওয়া সত্বেও নিজ বাড়ীতে থেকে কালকিনি বা মাদারীপুর স্কুল কলেজে লেখা পড়া করতে পারেনি। তাদেরকে থাকতে হয়েছে বাড়তি অর্থ খরচ করে হোষ্টেলে বা আত্মীয় পরিজনের বাড়ীতে ।
স্বাধীনতাত্তোর যুদ্ধ বিধস্থ বাংলাদেশকে গড়ে তোলার জন্য জাতিরজনকের সীমিত সময়ে এ ভাঙ্গন রোধকরা বা বাধ নির্মাণ করে কৃষক কুলকে বাচানো সম্ভব হয়নি। সাবেক এম সি এ সংসদ সদস্য, জাতিরজনকের সহকর্মী সাবেক মাদারীপুর মহকুমাধীন মুক্তিযুদ্ধের সফল সংগঠক হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধাদের পৃষ্ঠপোষক মুজিবনগরের চাদপাড়া মুক্তিযোদ্ধা অভ্যর্থনা ক্যাম্প পরিচালক, মাদারীপুর সমবায় সমিতি তথা বণিক ও ব্যবসায়ীদের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মরহুম মতিউর রহমান এ নদীর কুল ভাঙ্গন রোধকল্পে কয়েকটি প্রকল্প ফরিদপুর জেলা প্রশাসন/নৌ পরিবহন ও সম্পদ বিভাগ/মাদারীপুর মহকুমা প্রশাসনে জমা দিয়েছিলেন এবং এ সকল প্রকল্প সমূহের কোনটিই তাঁর জীবদ্ধশায় অনুমোদন পায়নি। ফলে আড়িয়াল খাঁ পারের হত দরিদ্র্য কৃষক শ্রমিক ও সকল পেশার জনগণের ভাগ্যেরও কোন পরিবর্তন হয়নি। দিনের পর দিন নদীর ভাঙ্গনে ঘর বাড়ী পৈত্রিক সম্পত্তি হারিয়ে গ্রাম ছেড়ে হয়েছে শহরবাসী ।
৭৫ পরবর্তীতে স্বাধীনতা বিরোধীশক্তি ২১ বছর ক্ষমতায় থাকার কারনে বৃহত্তর ফরিদপুর জেলায় উন্নয়নের কোন ছোয়া লাগেনি এবং জনগণের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন আসেনি। যারাই ক্ষমতায় এসেছে, তারাই সরকারী বেসরকারী ও জনগণের সম্পদ লুন্ঠনে ব্যতিব্যস্ত থেকেছে। ১৯৯৬ সালে ২১ বছর পরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে মাদারীপুর কালকিনি-৩ আসনের জনগণ উন্নয়নে মূখ দেখতে পায়নি।
১৯৯৬ সালে মহান স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে মাদারীপুর কালকিনি-৩ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য বর্ণাঢ্য ব্যবসায়ী সাঁকো ইন্টারন্যাশনালের কর্ণধার সফল সাংসদ ও সাবেক মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের একান্ত প্রচেষ্টা ও শ্রমের ফলশ্রতিতে গড়ে ওঠে আড়িয়াল খাঁ সেতু । অতি সম্প্রতি আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আড়িয়াল খাঁ সেতু নির্মাণ হবার কারনে। এ অঞ্চলের ছেলে মেয়েরা সকল উন্নয়ন থেকে এতদিন বঞ্ছিত ছিল যার অবসান হয়েছে ।
কিন্তু এ সেতুর নামকরনে জনমনে নানাবিধ প্রশ্নের উদ্রেক হয়েছে। সেতুর নামকরণ করা হয়েছে “শেখ লুতফর রহমান সেতু” । জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের পিতার নামে সেতুর নামকরনে কার আপত্তি নেই কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে এত টূকুন সামান্য একটি সেতুর নামকরণ কেন এত বড় বিশাল বিখ্যাত জগতখ্যাত বঙ্গবন্ধুর পিতার নাম করা হল? সেতো বঙ্গবন্ধুর পিতা। শেখ হাসিনার গর্বিত গুনি জ্ঞানি শিক্ষক দাদা। তাঁকে কেন এ সামান্য সেতুর সাথে জড়িয়ে ক্ষুদ্রতায় নামে আনার বা রাখার প্রবৃত্তি আমাদের? তিনি মাদারীপুরের শিক্ষক ছিলেন। তাঁর নামে মাদারীপুর সদর এলাকায় প্রতিষ্ঠা করার অনেক প্রতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা রয়েছে। আড়িয়াল খা’র পারের এই সামান্য সেতুটির নাম কেন তাঁর নামে রাখা হল, আমাদের বোধগম্য নয়। তিনি তো মহান মুক্তিযুদ্ধের মহা নায়ক মহান স্বাধীনতার স্থপতি, তাঁর পিতাকে কেন এ ক্ষুদ্রতম একটি সেতুর পর্যায়ে নামিয়ে আনার মানসিকতা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।
মহা নবী হযরত মোহাম্মাদ (সাঃ) এর পিতা “আব্দুল্লাহ এবং মাতা আমেনা” এ ইতিহাস জগতবাসী জানেন। তাঁদের সন্মান সকলের উর্ধে । তাই তাঁদের নাম কি সর্বত্র ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে?
অনেক নেতা সাংসদদের দেখেছি আপনাকে খুশি করার মানসে তোষামোদি এবং অতিভক্তের লক্ষন হিসেবে চাটুকারীতাও অনেকে করে থাকেন, যা’বস্তুত আপনাকে খুশি করার জন্য এবং নিজের অবস্থানকে আপনার নিকট তুলে ধরার এক হীন মনোবৃত্তিসূলভ মানসিকতা মাত্র।
এমতাবস্থায়, অত্র এলাকার জন্য যিনি আওয়ামী রাজনীতির ব্যানারে সারা জীবন জনগনের সেবা করে গিয়েছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে যিনি হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ আশ্রয় উতসাহ এবং পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রধান নায়ক এডভোকেট মরহুম মতিউর রহমানের নামে “আড়িয়াল খাঁ সেতুর” নামকরণ করা হলে মুক্তিযুদ্ধের সৃতি ও একজন সংগঠকের সৃতি জনগণকে স্বরন করিয়ে দেবে এবং মরহুম মতিউর রহমানের বিদেহী আত্মাও সন্মানিত হবেন-কারন তিনি ৭০ এর নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী এম সি এ ( সাংসদ ) এবং একজন আওয়ামি যোদ্ধা ছিলেন। আড়িয়াল খাঁ সেতু মরহুম এডভোকেত মতিউর রহমানের নামে করা হলে-এলাকার জনগণ-আওয়ামী লীগ নেতা কর্মী ভক্ত অনুরাগী অনুসারী সহ সর্ব স্তরের জনগণ বরং বিষয়টিকে অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে কায়মনোবাক্যে গ্রহণ করবে এবং স্বাগত জানাবে। সবাই খুশি হবেন আপনার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে।
অতএব মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার বিচক্ষনতার নিকট বিগত দিনের সকল অকল্যাণমূলক বা জনগণের প্রাণের চাহিদার বিরুদ্ধে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ হার মেনেছে। আপনি সঠিক সিদ্ধান্ত দেবেন এটাই এই নিভৃত অবহেলিত বঞ্চিত বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের সর্ব পেশায় নিয়োজিত, সর্বস্তরের কৃষক শ্রমিক জেলে তাতী কামার কুমার অবনত মস্তকে মেনে নেবে। আপনি ভালো থাকুন। বেচে থাকুন সুস্থ্য থাকুন। আল্লাহ্ আপনাকে ১০০ বছরের নেক হায়াত দান করুন।
জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।
মোকতেল হোসেন মুক্তি
মুক্তিযোদ্ধা কন্ঠশিল্পী
গ্রাম দক্ষিন আকাল বরিশ
ডাকঘর খাসের হাট
বাঁশগাড়ি কালকিনি মাদারীপুর ।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঢাকা।
(বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মরহুম মতিউর রহমানের নামে করার আবেদন।)
বিষয়ঃ আড়িয়াল খাঁ সেতু নামকরণ প্রসঙ্গ
মহাত্মন,
আমি মাদারীপুর জেলাধীন কালকিনি উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়ন নিবাসী একজন সচেতন নাগরিক এবং একজন মুক্তিযোদ্ধা কণ্ঠশিল্পী ।
আড়িয়াল খাঁ নদীর তীরে শিশুকালা কৈশর ও যৌবন কাটিয়েছি। এতদাঞ্চলের গরীব কৃষক শ্রমিক জেলা তাতী শিল্পপতি ব্যবসায়ী রাজনীতিবীদ শিক্ষক ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার তথা সকল পেশা ও শ্রেণীর মানুষের একান্ত ইচ্ছা ও আকাংখার কথা ছোটকাল থেকেই উপলব্ধি করতাম এবং অনুভব করে সুখ দুখের ভাগি হবার চেষ্টা করতাম।
আড়িয়াল খাঁ নদীর ভাংগনে বিগত বছর গুলোতে নদীর দুই পারের হাজার হাজার কৃষক গৃহস্থ তাদের বাপ দাদার সহায় সম্বল ফসলি জমি ঘর বাড়ী ভিটে মাটি সম্পত্তি হারিয়েছে এই স্রোতস্বিনী আড়িয়াল খার ভাঙ্গনে ।
অন্য দিকে আমরা বাঁশগাড়ি ইউনিয়নবাসী মূলতঃ মাদারীপুর জেলাধীন হলেও আড়িয়াল খাঁ নদীর কারনেই আমরা চির বঞ্ছিত যোগাযোগ ব্যবস্থা থেকেও । মাদারীপুর জেলা থেকে সম্পূর্ণ আলাদা এ অবহেলিত ইউনিয়ন বাঁশগাড়ির জনগণকে সারা জীবন নৌকা এবং লঞ্চ ও ফেরি পারাপারের মাধ্যমে কালকিনি সদর ও মাদারীপুর যাতায়াত করতে হয়। ফলে এ ইউনিয়নের কোন ছেলে মেয়ে অতি নিকটে হওয়া সত্বেও নিজ বাড়ীতে থেকে কালকিনি বা মাদারীপুর স্কুল কলেজে লেখা পড়া করতে পারেনি। তাদেরকে থাকতে হয়েছে বাড়তি অর্থ খরচ করে হোষ্টেলে বা আত্মীয় পরিজনের বাড়ীতে ।
স্বাধীনতাত্তোর যুদ্ধ বিধস্থ বাংলাদেশকে গড়ে তোলার জন্য জাতিরজনকের সীমিত সময়ে এ ভাঙ্গন রোধকরা বা বাধ নির্মাণ করে কৃষক কুলকে বাচানো সম্ভব হয়নি। সাবেক এম সি এ সংসদ সদস্য, জাতিরজনকের সহকর্মী সাবেক মাদারীপুর মহকুমাধীন মুক্তিযুদ্ধের সফল সংগঠক হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধাদের পৃষ্ঠপোষক মুজিবনগরের চাদপাড়া মুক্তিযোদ্ধা অভ্যর্থনা ক্যাম্প পরিচালক, মাদারীপুর সমবায় সমিতি তথা বণিক ও ব্যবসায়ীদের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মরহুম মতিউর রহমান এ নদীর কুল ভাঙ্গন রোধকল্পে কয়েকটি প্রকল্প ফরিদপুর জেলা প্রশাসন/নৌ পরিবহন ও সম্পদ বিভাগ/মাদারীপুর মহকুমা প্রশাসনে জমা দিয়েছিলেন এবং এ সকল প্রকল্প সমূহের কোনটিই তাঁর জীবদ্ধশায় অনুমোদন পায়নি। ফলে আড়িয়াল খাঁ পারের হত দরিদ্র্য কৃষক শ্রমিক ও সকল পেশার জনগণের ভাগ্যেরও কোন পরিবর্তন হয়নি। দিনের পর দিন নদীর ভাঙ্গনে ঘর বাড়ী পৈত্রিক সম্পত্তি হারিয়ে গ্রাম ছেড়ে হয়েছে শহরবাসী ।
৭৫ পরবর্তীতে স্বাধীনতা বিরোধীশক্তি ২১ বছর ক্ষমতায় থাকার কারনে বৃহত্তর ফরিদপুর জেলায় উন্নয়নের কোন ছোয়া লাগেনি এবং জনগণের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন আসেনি। যারাই ক্ষমতায় এসেছে, তারাই সরকারী বেসরকারী ও জনগণের সম্পদ লুন্ঠনে ব্যতিব্যস্ত থেকেছে। ১৯৯৬ সালে ২১ বছর পরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে মাদারীপুর কালকিনি-৩ আসনের জনগণ উন্নয়নে মূখ দেখতে পায়নি।
১৯৯৬ সালে মহান স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে মাদারীপুর কালকিনি-৩ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য বর্ণাঢ্য ব্যবসায়ী সাঁকো ইন্টারন্যাশনালের কর্ণধার সফল সাংসদ ও সাবেক মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের একান্ত প্রচেষ্টা ও শ্রমের ফলশ্রতিতে গড়ে ওঠে আড়িয়াল খাঁ সেতু । অতি সম্প্রতি আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আড়িয়াল খাঁ সেতু নির্মাণ হবার কারনে। এ অঞ্চলের ছেলে মেয়েরা সকল উন্নয়ন থেকে এতদিন বঞ্ছিত ছিল যার অবসান হয়েছে ।
কিন্তু এ সেতুর নামকরনে জনমনে নানাবিধ প্রশ্নের উদ্রেক হয়েছে। সেতুর নামকরণ করা হয়েছে “শেখ লুতফর রহমান সেতু” । জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের পিতার নামে সেতুর নামকরনে কার আপত্তি নেই কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে এত টূকুন সামান্য একটি সেতুর নামকরণ কেন এত বড় বিশাল বিখ্যাত জগতখ্যাত বঙ্গবন্ধুর পিতার নাম করা হল? সেতো বঙ্গবন্ধুর পিতা। শেখ হাসিনার গর্বিত গুনি জ্ঞানি শিক্ষক দাদা। তাঁকে কেন এ সামান্য সেতুর সাথে জড়িয়ে ক্ষুদ্রতায় নামে আনার বা রাখার প্রবৃত্তি আমাদের? তিনি মাদারীপুরের শিক্ষক ছিলেন। তাঁর নামে মাদারীপুর সদর এলাকায় প্রতিষ্ঠা করার অনেক প্রতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা রয়েছে। আড়িয়াল খা’র পারের এই সামান্য সেতুটির নাম কেন তাঁর নামে রাখা হল, আমাদের বোধগম্য নয়। তিনি তো মহান মুক্তিযুদ্ধের মহা নায়ক মহান স্বাধীনতার স্থপতি, তাঁর পিতাকে কেন এ ক্ষুদ্রতম একটি সেতুর পর্যায়ে নামিয়ে আনার মানসিকতা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।
মহা নবী হযরত মোহাম্মাদ (সাঃ) এর পিতা “আব্দুল্লাহ এবং মাতা আমেনা” এ ইতিহাস জগতবাসী জানেন। তাঁদের সন্মান সকলের উর্ধে । তাই তাঁদের নাম কি সর্বত্র ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে?
অনেক নেতা সাংসদদের দেখেছি আপনাকে খুশি করার মানসে তোষামোদি এবং অতিভক্তের লক্ষন হিসেবে চাটুকারীতাও অনেকে করে থাকেন, যা’বস্তুত আপনাকে খুশি করার জন্য এবং নিজের অবস্থানকে আপনার নিকট তুলে ধরার এক হীন মনোবৃত্তিসূলভ মানসিকতা মাত্র।
এমতাবস্থায়, অত্র এলাকার জন্য যিনি আওয়ামী রাজনীতির ব্যানারে সারা জীবন জনগনের সেবা করে গিয়েছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে যিনি হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ আশ্রয় উতসাহ এবং পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রধান নায়ক এডভোকেট মরহুম মতিউর রহমানের নামে “আড়িয়াল খাঁ সেতুর” নামকরণ করা হলে মুক্তিযুদ্ধের সৃতি ও একজন সংগঠকের সৃতি জনগণকে স্বরন করিয়ে দেবে এবং মরহুম মতিউর রহমানের বিদেহী আত্মাও সন্মানিত হবেন-কারন তিনি ৭০ এর নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী এম সি এ ( সাংসদ ) এবং একজন আওয়ামি যোদ্ধা ছিলেন। আড়িয়াল খাঁ সেতু মরহুম এডভোকেত মতিউর রহমানের নামে করা হলে-এলাকার জনগণ-আওয়ামী লীগ নেতা কর্মী ভক্ত অনুরাগী অনুসারী সহ সর্ব স্তরের জনগণ বরং বিষয়টিকে অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে কায়মনোবাক্যে গ্রহণ করবে এবং স্বাগত জানাবে। সবাই খুশি হবেন আপনার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে।
অতএব মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার বিচক্ষনতার নিকট বিগত দিনের সকল অকল্যাণমূলক বা জনগণের প্রাণের চাহিদার বিরুদ্ধে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ হার মেনেছে। আপনি সঠিক সিদ্ধান্ত দেবেন এটাই এই নিভৃত অবহেলিত বঞ্চিত বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের সর্ব পেশায় নিয়োজিত, সর্বস্তরের কৃষক শ্রমিক জেলে তাতী কামার কুমার অবনত মস্তকে মেনে নেবে। আপনি ভালো থাকুন। বেচে থাকুন সুস্থ্য থাকুন। আল্লাহ্ আপনাকে ১০০ বছরের নেক হায়াত দান করুন।
জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।
মোকতেল হোসেন মুক্তি
মুক্তিযোদ্ধা কন্ঠশিল্পী
গ্রাম দক্ষিন আকাল বরিশ
ডাকঘর খাসের হাট
বাঁশগাড়ি কালকিনি মাদারীপুর ।