Monday, April 23, 2018

বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের মানুষগুলোর কষ্টের কথা

আমাদের বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের মানুষগুলোর কষ্টের কথা কেউ জানেনা। বাংলাদেশের নিভৃত পল্লী, অবহেলিত জনপদ বা প্রত্যন্তাঞ্চল বলতে যতগুলো গ্রাম/ইউনিয়ন রয়েছে তার মধ্যে মাদারীপুর জেলাধীন কালকিনি উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়ন অন্যতম। ইউনিয়নটির মধ্যদিয়ে প্রবাহিত আড়িয়ালখা নদী, পূর্বে শরীয়তপুরের গোসাইরহাট সেও এক বিশাল খাল দ্বারা দ্বিখন্ডিত বাঁশগাড়ি ইউনিয়ন। Image may contain: 7 people, people smiling, text

এই বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের শেষ প্রান্তে যে গ্রামটি সে গ্রামেই জন্ম নিয়েছিলেন ৭০ এর নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে বিপুল ভোটে জয়লাভ করা এম সি এ (এম পি) বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম এডঃ মতিউর রহমান (বর্তমান খাসের হাট হাই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক প্রেসিডেন্ট মরহুম শফিজ উদ্দিন এর নাতি, খাসেরহাট তথা বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের সর্ব প্রথম শিক্ষা গুরু পণ্ডিত স্যারের গর্বিত কনিষ্ঠপুত্র এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নিউজিল্যান্ড নিবাসী হানিফ মাহমুদের চাচাত ভাই)।

এই মরহুম এডঃ মতিউর রহমান যিনি ৭০ এর নির্বাচনের পর ১৯৭১ এর পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হবার লক্ষে ভারতের চাদপাড়ায় "চাদপাড়া শরণার্থী শিবির" স্থাপন করে হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে আশ্রয় খাদ্য প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করেছিলেন। আমি নিজেও সে ক্যাম্পের একজন মুক্তিযোদ্ধা। দিন বদলে যায়, মানুষ ভুলতে শুরু করে সোনালী অথবা দুঃসময়ের অতীত। আমরাও ভুলে গেছি বীর মুক্তিযোদ্ধা এডঃ মতিউর রহমানের নাম এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অবদানের মহান ইতিহাস।
বলছিলাম অবহেলিত জনপদ বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের চির বঞ্ছিত অভাবী দুর্দশাগ্রস্থ বঙ্গবন্ধু ও নৌকা প্রেমী হতভাগা মানুষের প্রতিদিনের জীবনের করুন ইতিবৃত্ত।

সেই শিশুকালে গামছা পরে অথবা পানিতে সাতরিয়ে দূর দূরান্ত থেকে খাসের হাট স্কুলে অ আ ক খ পড়তে যেতাম। সকালে যেতাম আর সেই সন্ধায় ফিরতাম। না সড়ক, না গাড়ি, না নৌকা, সেতু, না সাঁকো কিছুই ছিল না। বিদ্যুতের তো প্রশ্নই ওঠেনা। দেশ স্বাধীন হয়েছে ৪৭ বছর। এই সবে মাত্র সৈয়দ আবুল হোসেনের শেষ মন্ত্রীত্বকালীন সময়ে কোন কোন গ্রামে পল্লী বিদ্যুতের আলো জ্বলেছিল।

১৭ বছর ইন্টারনেটে ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য ব্লগিং করছি কিন্তু দেশের বাড়ী যেয়ে বিদ্যুতের আলো চোখে দেখিনি। আর আমার জন্মস্থান দক্ষিন আকাল বরিশে মোটেই কোন সড়ক বা বাঁশের সাঁকোও ছিল না। কয়েক বছর আগে চেয়ারম্যান সালাম তালুকদারের বদৌলতে এবং সৈয়দ আবুল হোসেনের দয়ায় একটি সড়ক হয়েছে বটে। এখানে আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিমের কৃতিত্বের কিছু নেই; তিনি কিছুই করেন নি। শুধু মঞ্চে বড় বড় বক্তৃতা দিয়ে মাইক ফাটানো ছাড়া আমরা কিছু দেখিনি বা শুনিনি।
যেহেতু আমরা চির বঞ্ছিত। বঞ্চিত বিদ্যুৎ থেকে, সড়ক থেকে, ব্রীজ কাল্ভারট থেকে, সরকারী বেসরকারী সকল সাহায্য অনুদান থেকে; বঞ্ছিত মহান স্বাধীনতার ফসল থেকে। এর মূল কারনই ছিল যে মরহুম এডঃ মতিউর রহমানের পরলোকগমনের পরে কেউ আর আমাদের দিকে ফিরে তাকাননি।
এ বাঁশগাড়ি নিয়ে কেউ কোন ভালো সংবাদও কোন পত্র/পত্রিকা বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম/ টিভি মিডিয়ায় কোন কারনেই প্রচার করেনি। প্রচার করেছে মাত্র সেদিন আড়িয়াল খাঁ সেতু উদ্বোধনের সময়। এ সেতু নির্মাণে আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিমের কোন কৃতিত্ব নেই বা ছিল না। তিনি হঠাৎ বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনার দয়ায় সাংসদ হয়ে ঘোষণা দিলেন, তিনিই কালকিনি উন্নয়নের প্রবক্তা এবং রুপকার! কি অদ্ভূত ও তাজ্জব ঘটনা। নাসিম সাহেব শেখ হাসিনাকে খুশি করার জন্য আড়িয়াল খাঁ সেতুর নামকরন করলেন "শেখ লুতফর রহমান সেতু" । কত চমৎকার তোষামোদি ও তেল মালিশকরণীয় প্রথা! নেত্রীকে খুশি করার জন্য বংগবন্ধুর গর্বিত পিতা মাদারীপুরের তৎকালীন শিক্ষক শেখ লুতফর রহমানের নামে আড়িয়াল খাঁ সেতু নামকরনের যুক্তি কোথায়? কোথায় গোপালগঞ্জ এবং কোথায় বাঁশগাড়ি ইউনিয়ন? Image result for arial khan river
অন্যদিকে বলতে গেলে যদিও শুনতে খারাপই লাগবে যে বাঁশগাড়ি ইউনিয়নে বঙ্গবন্ধুর গর্বিত পিতা মরহুম শেখ লুতফর রহমানের কি অবদান রয়েছে?
সেতো জাতিরজনকের পিতা এবং বাঙ্গালী জাতির ভাগ্যোন্নয়নে জীবনের সব কিছু বিলিয়ে দেয়া হতভাগিনী শেখ হাসিনার গর্বিত দাদাজান। এই নিভৃত পল্লী এলাকার এপার ওপার সংযোগের ক্ষেত্রে কেন সামান্য একটি সেতুর নামে তাঁর সন্মানিত নাম ব্যবহার করে আমরা তাকে আরো খাটো করছি? এ কথা কি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একবারো ভেবেছিলেন বা ভাববার অবকাশ ছিল অথবা ভাবতে দেয়া হয়নি !
চাটুকারীতা আজ এমন পর্যায়ে চলে গিয়েছে যে দেশ জাতি ও দেশের মানুষের চিন্তা চেতনা বুদ্ধি জ্ঞান রুচিবোধ ও স্বাভাবিক ইচ্ছে আবেগ অনুভূতির বাইরে গিয়ে সরকারী সিদ্ধান্ত মানুষের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। এ নিয়ে কেউ ভাবেনও না। সবাই খুব খুশি । কেউ ভাবছেন না যে আড়িয়াল খাঁ সেতুর নাম বঙ্গবন্ধুর পিতার নামে করার আদৌ কোন যুক্তিগত কারন আছে কি নেই?
এই ক্ষুদ্র সেতুটি হতে পারতো মহান স্বাধীনতার সফল সংগঠক, হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধা গড়ে তোলার কারীগর বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম এডভোকেট মতিউর রহমানের (এম সি এ -সংসদ সদস্য ) অথবা হতে পারতো এই বাঁশগাড়ি ইউনিয়নে/ খাসের হাটে ১৯৭১ সালে গ্রাম থেকে যুবকদের ডেকে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষন দেয়া এবং পরবর্তীতে ভারতে নিয়ে গিয়ে অস্ত্র হাতে দেশ স্বাধীন করার লক্ষে ঝাপিয়ে পরে জীবন দানকারী শহীদ মুক্তিযোদ্ধা মোঃ নুরুল হক শিকদার (বীর বিক্রম ) এর নামে । এখানে সৈয়দ আবুল হোসেন নিজে এই সেতু নির্মাণের সকল ব্যবস্থা / আয়োজন করে সেতু নির্মাণে সফল হলেও তিনি অনাহুতভাবে অযাচিত অহেতুক দুর্নাম ও মিথ্যা রোষানলের বলি হিসেবে চুপ করে থাকলেন।
সেতু নির্মাণের কৃতিত্ব উপর পর্যায়ে পৌছে গেল কালকিনি থেকে মাদারীপুরের বর্তমান বিনা ভোটে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিমের খাতায়।
বাহ রে স্বাধীনতা! বাহ রে হতভাগা বাঁশগাড়ি ইউনিয়নবাসী। বাহ 

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমীপেষু
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঢাকা।

(বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মরহুম মতিউর রহমানের নামে করার আবেদন।)

বিষয়ঃ আড়িয়াল খাঁ সেতু নামকরণ প্রসঙ্গ
মহাত্মন,

আমি মাদারীপুর জেলাধীন কালকিনি উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়ন নিবাসী একজন সচেতন নাগরিক এবং একজন মুক্তিযোদ্ধা কণ্ঠশিল্পী ।
আড়িয়াল খাঁ নদীর তীরে শিশুকালা কৈশর ও যৌবন কাটিয়েছি। এতদাঞ্চলের গরীব কৃষক শ্রমিক জেলা তাতী শিল্পপতি ব্যবসায়ী রাজনীতিবীদ শিক্ষক ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার তথা সকল পেশা ও শ্রেণীর মানুষের একান্ত ইচ্ছা ও আকাংখার কথা ছোটকাল থেকেই উপলব্ধি করতাম এবং অনুভব করে সুখ দুখের ভাগি হবার চেষ্টা করতাম।
আড়িয়াল খাঁ নদীর ভাংগনে বিগত বছর গুলোতে নদীর দুই পারের হাজার হাজার কৃষক গৃহস্থ তাদের বাপ দাদার সহায় সম্বল ফসলি জমি ঘর বাড়ী ভিটে মাটি সম্পত্তি হারিয়েছে এই স্রোতস্বিনী আড়িয়াল খার ভাঙ্গনে ।

অন্য দিকে আমরা বাঁশগাড়ি ইউনিয়নবাসী মূলতঃ মাদারীপুর জেলাধীন হলেও আড়িয়াল খাঁ নদীর কারনেই আমরা চির বঞ্ছিত যোগাযোগ ব্যবস্থা থেকেও । মাদারীপুর জেলা থেকে সম্পূর্ণ আলাদা এ অবহেলিত ইউনিয়ন বাঁশগাড়ির জনগণকে সারা জীবন নৌকা এবং লঞ্চ ও ফেরি পারাপারের মাধ্যমে কালকিনি সদর ও মাদারীপুর যাতায়াত করতে হয়। ফলে এ ইউনিয়নের কোন ছেলে মেয়ে অতি নিকটে হওয়া সত্বেও নিজ বাড়ীতে থেকে কালকিনি বা মাদারীপুর স্কুল কলেজে লেখা পড়া করতে পারেনি। তাদেরকে থাকতে হয়েছে বাড়তি অর্থ খরচ করে হোষ্টেলে বা আত্মীয় পরিজনের বাড়ীতে ।

স্বাধীনতাত্তোর যুদ্ধ বিধস্থ বাংলাদেশকে গড়ে তোলার জন্য জাতিরজনকের সীমিত সময়ে এ ভাঙ্গন রোধকরা বা বাধ নির্মাণ করে কৃষক কুলকে বাচানো সম্ভব হয়নি। সাবেক এম সি এ সংসদ সদস্য, জাতিরজনকের সহকর্মী সাবেক মাদারীপুর মহকুমাধীন মুক্তিযুদ্ধের সফল সংগঠক হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধাদের পৃষ্ঠপোষক মুজিবনগরের চাদপাড়া মুক্তিযোদ্ধা অভ্যর্থনা ক্যাম্প পরিচালক, মাদারীপুর সমবায় সমিতি তথা বণিক ও ব্যবসায়ীদের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মরহুম মতিউর রহমান এ নদীর কুল ভাঙ্গন রোধকল্পে কয়েকটি প্রকল্প ফরিদপুর জেলা প্রশাসন/নৌ পরিবহন ও সম্পদ বিভাগ/মাদারীপুর মহকুমা প্রশাসনে জমা দিয়েছিলেন এবং এ সকল প্রকল্প সমূহের কোনটিই তাঁর জীবদ্ধশায় অনুমোদন পায়নি। ফলে আড়িয়াল খাঁ পারের হত দরিদ্র্য কৃষক শ্রমিক ও সকল পেশার জনগণের ভাগ্যেরও কোন পরিবর্তন হয়নি। দিনের পর দিন নদীর ভাঙ্গনে ঘর বাড়ী পৈত্রিক সম্পত্তি হারিয়ে গ্রাম ছেড়ে হয়েছে শহরবাসী ।

৭৫ পরবর্তীতে স্বাধীনতা বিরোধীশক্তি ২১ বছর ক্ষমতায় থাকার কারনে বৃহত্তর ফরিদপুর জেলায় উন্নয়নের কোন ছোয়া লাগেনি এবং জনগণের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন আসেনি। যারাই ক্ষমতায় এসেছে, তারাই সরকারী বেসরকারী ও জনগণের সম্পদ লুন্ঠনে ব্যতিব্যস্ত থেকেছে। ১৯৯৬ সালে ২১ বছর পরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে মাদারীপুর কালকিনি-৩ আসনের জনগণ উন্নয়নে মূখ দেখতে পায়নি।

১৯৯৬ সালে মহান স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে মাদারীপুর কালকিনি-৩ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য বর্ণাঢ্য ব্যবসায়ী সাঁকো ইন্টারন্যাশনালের কর্ণধার সফল সাংসদ ও সাবেক মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের একান্ত প্রচেষ্টা ও শ্রমের ফলশ্রতিতে গড়ে ওঠে আড়িয়াল খাঁ সেতু । অতি সম্প্রতি আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আড়িয়াল খাঁ সেতু নির্মাণ হবার কারনে। এ অঞ্চলের ছেলে মেয়েরা সকল উন্নয়ন থেকে এতদিন বঞ্ছিত ছিল যার অবসান হয়েছে ।

কিন্তু এ সেতুর নামকরনে জনমনে নানাবিধ প্রশ্নের উদ্রেক হয়েছে। সেতুর নামকরণ করা হয়েছে “শেখ লুতফর রহমান সেতু” । জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের পিতার নামে সেতুর নামকরনে কার আপত্তি নেই কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে এত টূকুন সামান্য একটি সেতুর নামকরণ কেন এত বড় বিশাল বিখ্যাত জগতখ্যাত বঙ্গবন্ধুর পিতার নাম করা হল? সেতো বঙ্গবন্ধুর পিতা। শেখ হাসিনার গর্বিত গুনি জ্ঞানি শিক্ষক দাদা। তাঁকে কেন এ সামান্য সেতুর সাথে জড়িয়ে ক্ষুদ্রতায় নামে আনার বা রাখার প্রবৃত্তি আমাদের? তিনি মাদারীপুরের শিক্ষক ছিলেন। তাঁর নামে মাদারীপুর সদর এলাকায় প্রতিষ্ঠা করার অনেক প্রতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা রয়েছে। আড়িয়াল খা’র পারের এই সামান্য সেতুটির নাম কেন তাঁর নামে রাখা হল, আমাদের বোধগম্য নয়। তিনি তো মহান মুক্তিযুদ্ধের মহা নায়ক মহান স্বাধীনতার স্থপতি, তাঁর পিতাকে কেন এ ক্ষুদ্রতম একটি সেতুর পর্যায়ে নামিয়ে আনার মানসিকতা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।
মহা নবী হযরত মোহাম্মাদ (সাঃ) এর পিতা “আব্দুল্লাহ এবং মাতা আমেনা” এ ইতিহাস জগতবাসী জানেন। তাঁদের সন্মান সকলের উর্ধে । তাই তাঁদের নাম কি সর্বত্র ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে?

অনেক নেতা সাংসদদের দেখেছি আপনাকে খুশি করার মানসে তোষামোদি এবং অতিভক্তের লক্ষন হিসেবে চাটুকারীতাও অনেকে করে থাকেন, যা’বস্তুত আপনাকে খুশি করার জন্য এবং নিজের অবস্থানকে আপনার নিকট তুলে ধরার এক হীন মনোবৃত্তিসূলভ মানসিকতা মাত্র।

এমতাবস্থায়, অত্র এলাকার জন্য যিনি আওয়ামী রাজনীতির ব্যানারে সারা জীবন জনগনের সেবা করে গিয়েছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে যিনি হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ আশ্রয় উতসাহ এবং পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রধান নায়ক এডভোকেট মরহুম মতিউর রহমানের নামে “আড়িয়াল খাঁ সেতুর” নামকরণ করা হলে মুক্তিযুদ্ধের সৃতি ও একজন সংগঠকের সৃতি জনগণকে স্বরন করিয়ে দেবে এবং মরহুম মতিউর রহমানের বিদেহী আত্মাও সন্মানিত হবেন-কারন তিনি ৭০ এর নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী এম সি এ ( সাংসদ ) এবং একজন আওয়ামি যোদ্ধা ছিলেন। আড়িয়াল খাঁ সেতু মরহুম এডভোকেত মতিউর রহমানের নামে করা হলে-এলাকার জনগণ-আওয়ামী লীগ নেতা কর্মী ভক্ত অনুরাগী অনুসারী সহ সর্ব স্তরের জনগণ বরং বিষয়টিকে অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে কায়মনোবাক্যে গ্রহণ করবে এবং স্বাগত জানাবে। সবাই খুশি হবেন আপনার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে।

অতএব মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার বিচক্ষনতার নিকট বিগত দিনের সকল অকল্যাণমূলক বা জনগণের প্রাণের চাহিদার বিরুদ্ধে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ হার মেনেছে। আপনি সঠিক সিদ্ধান্ত দেবেন এটাই এই নিভৃত অবহেলিত বঞ্চিত বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের সর্ব পেশায় নিয়োজিত, সর্বস্তরের কৃষক শ্রমিক জেলে তাতী কামার কুমার অবনত মস্তকে মেনে নেবে। আপনি ভালো থাকুন। বেচে থাকুন সুস্থ্য থাকুন। আল্লাহ্‌ আপনাকে ১০০ বছরের নেক হায়াত দান করুন।

জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।
মোকতেল হোসেন মুক্তি
মুক্তিযোদ্ধা কন্ঠশিল্পী
গ্রাম দক্ষিন আকাল বরিশ
ডাকঘর খাসের হাট
বাঁশগাড়ি কালকিনি মাদারীপুর ।

Saturday, November 11, 2017

শেখ মুজিবের ছাত্রজীবন আদর্শ ও দেশপ্রেমের প্রতিকৃতি।

শেখ মুজিবের ছাত্রজীবন
আদর্শ ও দেশপ্রেমের প্রতিকৃতি।

শেখ মুজিবের ছাত্রজীবন : আদর্শ ও দেশপ্রেমের প্রতিকৃতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবনের স্বপ্ন ছিল বাংলার স্বাধীনতা ও বাঙালির জাতিসত্তার প্রতিষ্ঠা। শৈশব কৈশোর থেকে তিনি এই আদর্শ নিয়েই বড় হয়ে ওঠেন। নিজেই নিজেকে প্রস্তুত করে তোলেন। তাঁর এই চারিত্রিক দৃঢ়তার পেছনে ছিল গভীর অধ্যয়ন, জানা-চেনা-শোনা ও দেখার গভীর অন্তর্দৃষ্টি। তিনি হৃদয়ের আবেগকে যথেষ্টভাবে ধারণ করতে সমর্থ হন। এর পেছনে ছিল মানুষকে ভালোবাসা ও সাহায্য করার জন্য তাঁর দরদী মন। এই শিক্ষাটা তিনি অর্জন করেন তাঁর পরিবারের মানুষদের দেখে, তাঁর গৃহশিক্ষকের কাছে এবং দারিদ্র অভাবগ্রস্থ গ্রামের মানুষকে দেখে। তাঁর হৃদয়ে যা কিছু ছাপ রেখেছে বা প্রভাব ফেলেছে সেটা তিনি গভীরভাবে বিশ্লেষণ করেছেন। এই ক্ষমতা অল্প বয়স থেকেই তাঁর আয়ত্তে ছিল। তাঁকে চিন্তাচ্ছন্ন করে তুলতো, তাঁকে আবেগতাড়িত করতো। তাঁর জাতির পিতা বা বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠার পেছনে তাঁর গ্রাম টুঙ্গিপাড়ার মানুষের একটা বড় ভূমিকা রয়েছে। এই ছোট্ট অনুন্নত গ্রাম ও মানুষের মধ্যে তিনি লক্ষাধিক গ্রাম ও কয়েক কোটি মানুষকেও দেখেছেন। আর সেজন্যই বাঙালি জাতির ভাগ্যকে তিনি জয় করতে গিয়ে তিনি নিজের জীবনের প্রতি তাকিয়ে দেখার সুযোগ পান নি। জেল-জুলুম, রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র, শাসকগোষ্টীর অত্যাচার– সবকিছু সহ্য করেছেন। কিন্তু বাংলার মানুষের সঙ্গে কখনও বিশ্বাসঘাতকতা করেননি। তাঁর লক্ষ্য ছিল বাংলার মানুষের মুক্তি। বাঙালি উন্নত জীবনের অধিকারী হোক। বিশ্বে মাথা উচু করে দাঁড়াক। বাঙালি জাতিসত্তাকে প্রতিষ্ঠা করুক। একজন মহান নেতা হবার সবকটি গুণই আমরা তার মধ্যে খুঁজে পাই। ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ টুঙ্গিপাড়ায় শেখ মুজিবের জন্ম হয়। মা-বাবার চোখের মণি, ভাই-বোনের আদর ভালোবাসা, আত্মীয়-স্বজন পাড়া-প্রতিবেশি সকলের কাছেই ছিল তার সমাদর। গ্রামের মাটি-আলো-বাতাসের স্পর্শ নিয়ে প্রকৃতির শান্ত শীতল সবুজ ছবিটি দেখে তিনি বড় হয়ে উঠলেন।
গিমাডাঙ্গা প্রাইমারি স্কুলে লেখাপড়া করেন। বাড়িতে লেখাপড়ার জন্য শিক্ষক, মৌলভী ও পণ্ডিত ছিলেন। গ্রাম থেকে গোপালগঞ্জ শহরে এসে মিশন স্কুলে ভর্তি হন। পিতা ছিলেন গোপালগঞ্জ দেওয়ানী কোর্টের সেরেস্তাদার। স্কুল ছাত্রজীবনেই তাঁর চোখে বেরিবেরি রোগ হওয়ায় কলকাতায় গিয়ে ডা. টি. আহমদের কাছে অস্ত্রপচার করতে হয়। দুই বছর লেখাপড়া বন্ধ ছিল। এ সময়টায় তিনি ঘুরে বেড়াতেন, সভায় গিয়ে বক্তৃতা শুনতেন, গৃহশিক্ষকের কাছে অনেক কথা কাহিনী ও খবরাখবর শুনতেন। সুস্থ হওয়ার পর তিনি আবার স্কুলে ভর্তি হন, খেলাধুলায়ও মনোযোগী হন। ফুটবল ছিল প্রিয়। স্কুলের দলের হয়ে খেলতেন। লেখাপড়া করতেন ঠিক মত, কেননা তাঁর মা-বাবার প্রচন্ড উৎসাহ ছিল এবং তীক্ষ্ণ দৃষ্টি ছিল, শাসনও ছিল। তাঁর গৃহশিক্ষক কাজী আবদুল হামিদ ছিলেন একজন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের কর্মী যিনি আত্মগোপন করতে তাদের বাসায় আশ্রয় নেন। সেই শিক্ষকই শেখ মুজিবের জীবনকে আলোকিত করার প্রথম প্রদীপটি জ্বালান। তিনি তাঁকে ইতিহাসের শাসকদের গল্প শোনান। বিপ্লব-বিদ্রোহের কাহিনী শোনান। বাংলার ইতিহাস কিশোর মুজিবের কাছে ছিল এক আদর্শময় পাঠ। বাঙালির কৃতিত্ব, শিল্প–সাহিত্য-সংস্কৃতির জ্ঞানও তিনি ধীরে ধীরে গ্রহণ করেন। এই শিক্ষা গ্রহণ করার পাশাপাশি সেই সময়ের বৃটিশ শাসকদের শাসন ও শোষণ, গান্ধিজীর আন্দোলন, হিন্দু-মুসলমান সম্পর্ক, রাজনৈতিক আন্দোলন, সামাজিক সমস্যাবলী, বন্যা-দুর্ভিক্ষ, খাদ্যাভাব – সবই তিনি তাঁর গভীর পর্যবেক্ষণ শক্তি দিয়ে বিশ্লেষণ করেছেন। স্কুল ছাত্র জীবনেই তিনি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। যারা রাজনীতি করতেন তাদের খুব কাছাকাছি চলে যান। ঐ সময়ে বাংলার প্রধানমন্ত্রী এ. কে. ফজলুল হক ও মন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী গোপালগঞ্জে রাজনৈতিক সফরে এলে তিনি তাঁদের সামনে গিয়ে স্কুলের ছাদ দিয়ে পানি পড়ার অভিযোগ তুলে ধরেন এবং মেরামতের দাবি জানান। তাঁর কথা বলার ভঙ্গি দেখে দুই নেতাই মুগ্ধ হন। সোহরাওয়ার্দী তাঁকে কাছে ডেকে কথা বলেন এবং এলাকার রাজনৈতিক খবরাখবর নেন। তিনি ঠিকানা দিয়ে চিঠি লিখতেও বলেন। শেখ মুজিবের সঙ্গে সেই প্রথম সম্পর্ক গড়ে ওঠে যা আজীবন ছিল। সোহরাওয়ার্দীর রাজনৈতিক আদর্শ শিষ্য হিসেবে শেখ মুজিব গড়ে উঠতে থাকেন। সেই সফরে সম্বর্ধনা জানাতে একটি কমিটি গঠিত হয়। পরবর্তীতে সেই কমিটির একটি গোলমালের ঘটনায় শেখ মুজিবসহ চার পাঁচজনকে আসামী করে বিরোধীরা থানায় একটি মামলা করে। গোপালগঞ্জ থানা হাজতে সাতদিন বন্দি থেকে জামিনে মুক্তিলাভ করেন। পরবর্তীতে ১৫০০ টাকা ক্ষতিপূরণ দিলে মামলা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।

সেই তাঁর প্রথম কারাজীবন এবং এটাও তাঁর জীবনে গভীরভাবে প্রভাব ফেলে। ১৯৪২ সালে এন্ট্রান্স পাশ করে শেখ মুজিব কলকাতায় ইসলামিয়া কলেজে ভর্তি হন। বৃটিশ শাসিত দুই বাংলা একত্রে বাংলা বা বেঙ্গল হিসেবে পরিচিত ছিল। বাংলার মেধাবী, মননশীল ছাত্ররা ইসলামিয়া কলেজে লেখাপড়া করতো এবং বেকার হোস্টেলে থাকতো। ১৯২৬ সালে ইসলামিয়া কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৪৭ সালে এর নামকরণ হয় সেন্ট্রাল কলকাতা কলেজ। ১৯৬০ সালে উপমহাদেশের প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ মাওলানা আবুল কালাম আজাদের নামে রাখা হয়। বর্তমানে মাওলানা আজাদ কলেজ নামে পরিচিত। শেখ মুজিব এখান থেকে ১৯৪৪ সালে আই.এ. এবং ১৯৪৭ সালে বি.এ. পাশ করেন। কলেজের পাশের রাস্তায় তালতলা থানার কাছেই বেকার হোস্টেল। তিনতলা বিরাট ভবন। শেখ মুজিব তিনতলার বাঁদিকের সামনের সারির কোনায় ২৪নং কক্ষে থাকতেন। ছোট্ট কক্ষ, কোন ফ্যান ছিল না তখন। একটি ছোট্ট খাট। পাশেই কাঠের তৈরি পড়ার টেবিল ও চেয়ার। একটি ছোট্ট আলমারীও আছে। বর্তমানে এটি বঙ্গবন্ধু স্মৃতি কক্ষ নামে পরিচিত। তাঁর ছবি ও তাঁর সম্পর্কিত লেখা বইয়ের একটি আলমারিও আছে। পাশের ২৫ নম্বর কক্ষটিও এর সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর একটি ভাস্কর্য রাখা হয়েছে। দরোজার পাশে দেয়ালে বঙ্গবন্ধুর একটি সংক্ষিপ্ত জীবনীও রাখা হয়েছে। পাশাপাশি এই দুটি কক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও তাঁর সঙ্গীসাথীরাও থাকতেন। সারাদেশ থেকে তাঁর ছাত্র রাজনীতির কর্মী, ভক্ত ও অনুরাগীরা এসে দেখা করতো এখানেই। অনেক সভা করেছেন হোস্টেলে। হোস্টেল সুপার ছিলেন অধ্যাপক সাঈদুর রহমান। ছাত্র-কর্মীদের থাকার জন্য শেখ মুজিব খালি রুম বা বড় হলঘর চাইলেই তিনি কখনও না করতেন না। শেখ মুজিবের প্রতি তাঁর একটা আলাদা স্নেহ-ভালোবাসা ছিল। ইসলামিয়া কলেজের প্রিন্সিপ্যাল ছিলেন ড. এইচ. আর. জুবিরী।

শেখ মুজিবের প্রতি তাঁর ছিল অপার স্নেহ। বিশেষ করে বি.এ. পরীক্ষায় বসার জন্য তিনি তাঁকে সবরকম সহযোগিতা করেছিলেন। কেননা দাঙ্গা-হাঙ্গামা, পুনর্বাসন ইত্যাদি কর্মকান্ডে শেখ মুজিব তখন ব্যস্ত থাকতেন। মুসলিম লীগের রাজনীতির সঙ্গেও ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। একদিকে ছাত্রনেতা হিসেবে বলিষ্ঠ সংগঠক ছিলেন, অপরদিকে মুসলিম লীগের ড্রইংরুম রাজনীতিকে সাধারণের মাঝে নিয়ে আসার কাজে তিনি সোহরাওয়ার্দী ও আবুল হাশেমের যোগ্য শিষ্য ছিলেন। বেকার হোস্টেলের ছাত্র সংসদের নেতৃত্বও তিনি নিয়ন্ত্রণ করতেন এবং একবার সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। শিক্ষক ও ছাত্র সকলের প্রিয় ছিলেন শেখ মুজিব। তাঁর আদর্শ, সাহস ও চিন্তা-ভাবনার প্রতি সকলের শ্রদ্ধা ছিল। স্কুল ছাত্রজীবন থেকেই শেখ মুজিব দেশের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৩৮ সালে মুসলিম লীগের ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি হিসেবে সিরাজগঞ্জে প্রাদেশিক মুসলিম লীগের সম্মেলনে যোগদান করে যথেষ্ট অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। এ সম্মেলনে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহসহ ভারতের বড় বড় নেতৃবৃন্দ যোগদান করেন। এছাড়াও দিল্লীতে ভারতীয় মুসলিম লীগের সাধারণ সম্মেলনে তিনি দুইবার যোগদান করেন।

সেখানেও নেতাদের ভাষণ শুনে তিনি অনুপ্রাণিত হন। কলকাতায় ছাত্রাবস্থায় তিনি দাঙ্গা দেখেছেন ও রুখেছেন। ১৯৪৬ সালের সাধারণ নির্বাচনেও তাঁর ভূমিকা ছিল। ছাত্রজীবন থেকেই দেশপ্রেম ও দেশের জন্য কাজ করা তাঁর স্বভাবের অংশ হয়ে ওঠে। ছাত্রজীবনে তাঁর কর্মকাণ্ড, বিচক্ষণতা ও ভাষণ শুনে সবাই আকৃষ্ট হতো। ১৯৪৭ সালের ডিসেম্বরে শেখ মুজিব ঢাকায় এসে ১৪০নং মোগলটুলীর ‘কর্মী-ক্যাম্পে’ ওঠেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন এবং সলিমুল্লাহ হলে মাঝে মাঝে থাকতেন।

ঢাকায় এসে ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন এবং মুসলিম ছাত্রলীগের স্বেচ্ছাচারিতা ও বাংলা বিরোধী ভূমিকার জন্য তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করেন। তিনি পূর্ব বাংলা মুসলিম ছাত্রলীগ গঠন করেন। যুবলীগেরও একজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। খাজা নাজিমুদ্দিনের বাংলাভাষাবিরোধী ভূমিকা এবং উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার হুমকির বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সমাজ যখন গর্জে ওঠে, তিনিও তাদের সঙ্গে নেতৃত্ব দেন। ১৯৪৮ সালে প্রথম প্রতিবাদ ও হরতাল পালিত হলে শেখ মুজিবও সবার সঙ্গে গ্রেফতার হন। পরে পূর্ব বাংলার মূখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন ছাত্রদের দাবি মেনে নিয়ে সবাইকে মুক্তি দেন। এরপর শেখ মুজিব কৃষকদের দাবি নিয়ে আন্দোলন করেন। তারপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর দাবি দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করেন। এসময় উপাচার্যের বাড়ি ঘেরাও কালে তাঁকেও পুলিশ গ্রেফতার করে এবং অনেকগুলো মামলা দায়ের করে। কারাগারে থাকার সময় তিনি আওয়ামী মুসলিম লীগের যুগ্ম-সম্পাদক নির্বাচিত হন। জেল থেকে বের হয়ে এক ছাত্রসভায় বক্তৃতা দিয়ে তিনি ছাত্র রাজনীতি থেকে বিদায় নেন এবং জাতীয় রাজনীতিতে যোগদান করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাঁকে বহিস্কার করা হয়েছিল। জেলে থাকাকালে সরকার তাঁকে জরিমানা ও মুচলেকার প্রস্তাব দেয় এবং জানায় তিনি যদি রাজনীতি না করেন, তাহলে ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দেয়া হবে। তিনি সরকারি প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছিলেন।
কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে শেখ মুজিব টুঙ্গিপাড়ায় গ্রামের বাড়িতে কিছুদিন অবস্থান করেন। তাঁর পিতা শেখ লুৎফর রহমান তাঁকে লন্ডনে গিয়ে ব্যারিস্টারি পড়তে বলেন। কিন্তু শেখ মুজিব ততদিনে পাকিস্তানের শাসকদের ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তকে অনুধাবন করে ফেলেন। তিনি তাঁর প্রিয় বাংলার জনগণকে পাকিস্তানের শোষণের মধ্যে ফেলে রেখে লন্ডনে গিয়ে আর পড়তে চাইলেন না। তিনি রাজনীতি করার সদিচ্ছা প্রকাশ করে বাংলার মানুষের আদায়ের দাবিতে আবার ঢাকা চলে এলেন। তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা জীবনের ইতি ঘটে। কিন্তু ঘরে বসে বই পড়ার অভ্যাস থাকায় তিনি একটি লাইব্রেরি গড়ে তোলেন। স্বচ্ছ মনের মানুষ ছিলেন, রাজনৈতিক চিন্তার দিক থেকে দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ছিলেন, সাহসী, সৎ ও দৃঢ় চারিত্রিক আদর্শের অধিকারী ছিলেন। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর আতঙ্ক ছিলেন একমাত্র শেখ মুজিব। মন্ত্রীত্বের লোভ, লাইসেন্সের টোপ এবং ব্যবসা-বানিজ্যের নানা সুযোগ সুবিধা দিয়ে তখন অনেক নেতাকে ক্রয় করা যেত। কিন্তু শেখ মুজিব তাঁর লক্ষ্যে দৃঢ় ছিলেন। জেল-জুলুম মামলা–ফাঁসির ভয় তাঁর মাথা নত করতে দেয়নি। বাংলার মানুষের মুক্তির দাবিতে, অধিকার আদায়ে, শোষণের বিরুদ্ধে তিনিই ছিলেন সোচ্চার প্রতিবাদী। তাঁর বজ্রকন্ঠ পাকিস্তানের ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছিল। দেশ ও মানুষকে তিনি তাঁর হৃদয়ের আধেয় করে একজন আত্মত্যাগী দেশপ্রেমিক নেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে সমর্থ হন। ছাত্রজীবন থেকে যে শিক্ষা ও দীক্ষা তাঁর জীবনকে আলোকিত করে তোলে, তার শিখা চিরন্তন করে রেখে গেছেন তিনি।

Friday, November 10, 2017

উত্তর চাই দেশবাসীর নিকট

https://liberationwar1971.blogspot.com/


মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী ও আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ডঃ আব্দুস সোবহান গোলাপ তার বিজনেস কার্ডে লিখেছেন তিনি চাদপাড়া ও ব্যারাকপুরের মুক্তিযোদ্ধা। আমিও চাদপাড়া ও ব্যারাকপুরের মুক্তিযোদ্ধা। ডঃ গোলাপ ক্ষমতায় বলে স্বীকৃতি পাবে আর আমি ক্ষমতা নেই বলে মন্ত্রীর অপমান সহ্য করবো? তাতো হয় না মাননীয় প্রধানমন্ত্রী? এক মায়ের পেটে হিন্দু মুসলিমের জন্ম হয় না। হয় দুইজনই হিন্দু নয়তো দুইজনই মুসলমান। এ প্রশ্ন আ ক ম মোজাম্মেল হককে করেছিলাম। সে মালদ্বীপে বলে গিয়েছে যে গোলাপ মুক্তিযোদ্ধা ছিল না। তাহলে সে মুক্তিযোদ্ধার সনদ কোথায় পেল? মন্ত্রী কোন উত্তর দেয়নি।

Friday, April 28, 2017

যেভাবে বাংলাদেশে ইসলামী জঙ্গিদের উত্থান


যেভাবে বাংলাদেশে ইসলামী জঙ্গিদের উত্থান
রণেশ মৈত্র

যেভাবে বাংলাদেশে ইসলামী জঙ্গিদের উত্থান

বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের যে ব্যাপক উত্থান ঘটেছে, তাদের কার্যক্রম ক্রমশই সম্প্রসারিত হচ্ছে এবং ইতোমধ্যেই বহুলাংশে তাদের বিস্তার ঘটাতে পেরেছে। বাংলাদেশের শাসকগোষ্ঠী তা নিরন্তর অস্বীকার করে এগুলো ‘কোনো উল্লেখযোগ্য ঘটনা নয়’ বা ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ বলে উড়িয়ে দিতে চাইলেও আন্তর্জাতিক অঙ্গণে বাংলাদেশের জঙ্গি উত্থান এক মারাত্নক উদ্বেগের সঞ্চার করেছে এবং তার বহি:প্রকাশ ঘটেছে গত ৯ জুনে প্রকাশিত নিউ ইয়র্ক টাইমসের একটি বিস্তারিত প্রতিবেদনে।
ওই প্রতিবেদনটিতে প্রধানত: বাংলাদেশের সরকারি মহলের কর্মকর্তাদেরই বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে ইসলামী লেবাস পরিহিত যে তরুণটি ঢাকার একটি জনাকীর্ণ চেকপোষ্টের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল, সে অধুনা তৎপর পুলিশের দৃষ্টি এড়াতে পারেনি। তরুণটিকে গ্রেফতার করা হয়। অত:পর দেখা যায়, যে একটি চাপাতি এবং লাইসেন্সবিহীন পিস্তল ও ছয়টি বুলেট নিয়ে যাচ্ছিল। তরুণটির কাছ থেকে অস্ত্র উদ্ধার হওয়ায় একটি আতঙ্কের কারণ বিগত তিনটি বছর ধরে বাংলাদেশে ‘নাস্তিক’ অভিধায় অভিহিত করে স্বাধীনচেতা লেখক, মুক্তমনা ব্লগার, মুক্তচিন্তায় বিশ্বাসী, বিদেশী নাগরিক, ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং অপরাপর নানাবিধ পেশায় নিয়োজিত সম্মানিত ব্যক্তিদেরকে হত্যা করে চলেছে।
এই হত্যাকারী আসলে কারা সে সম্পর্কে খুব কমই জানা গেছে। তবে এইটুকু শুধু জানা যায় যে তারা ইসলামের নামে ‘জিহাদের কর্মী এবং ক্রমশই তাদের জিহাদ নামক হত্যালীলা অধিকতর সংখ্যায় সংঘটিত হচ্ছে। আটককৃত ঐ তরুণটি পুলিশের নানা প্রশ্নের জবাবে বেশী কিছু বলতে রাজী হয়নি। শুধুমাত্র বলেছে যে তার নাম সাইফুল ইসলাম, বয়স ২৩ বছর এবং স্থানীয় একটি মাদ্রাসার শিক্ষক। কিন্তু মাত্র ছয় দিনের ব্যবধানে চিত্রটি পাল্টে গেল যখন ১৯ বছর বয়সী অপর দু’জন একটি সফল হত্যালীলা পরিচালনা করে ছুটে পালানোর সময় গ্রেফতার হয়ে পুলিশের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে প্রকাশ করে দেয় যে ২৩ বছর বয়স্ক সাইফুল ইসলাম তাদেরই সহকর্মী, কোনো মাদ্রাসা শিক্ষক নয়।
ছোট্ট এই ঘটনাটি বাংলাদেশের পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে অধিকতর সতর্ক এবং সক্রিয় হতে বাধ্য করেছে। এখন তারা অনেক গভীরে ঢুকে নানা অজানা তথ্য উদঘাটনে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। জঙ্গিদের পরিকল্পনা তার বাস্তবায়ন এবং হত্যার উদ্দেশ্য জেনে বাংলাদেশের মানুষ তো বটেই বাস্তবিক পক্ষেই সমগ্র বিশ্বে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। একটি দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের পুলিশের কাউন্টার টেররিজমের প্রধান মনিরুল ইসলাম তার তদন্ত কাজগুলির বিবরণ জনসমক্ষে তুলে ধরেছেন। বিগত ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি এই দায়িত্ব প্রাপ্ত হন।
২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ৩৯ জনকে এই জঙ্গিরা বর্বরোচিতভাবে হত্যা করেছে এবং এতে ব্যবহৃত অস্ত্র হলো চাপাতি, বন্দুক বা পিস্তল ও বোমা। এই হত্যাকাণ্ডগুলির বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চাপাতি ব্যবহৃত হয় এবং তাই দিয়ে ভিকটিমের পিঠে আঘাত করে গলা কেটে ফেলতে দেখা যায়। এরকম হত্যা ইদানিং বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এপ্রিলে এভাবে পাঁচজনকে এবং মে মাসে চারজনকে হত্যা করা হয় এবং কমপক্ষে আরও তিনজনকে হত্যা করা হয়েছে জুনের প্রথমার্ধেই।
গত ৫ জুন একই দিনে উত্তরাঞ্চলের নাটোরের একজন খ্রিষ্টান মুদির দোকানি ও চট্টগ্রামে তথাকার পুলিশ সুপারের স্ত্রীকে হত্যা করা হয়। অত:পর দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলে একজন হিন্দু পুরোহিতকে বিশাল মাঠের মধ্যে খুন করা হলো। দীর্ঘ ইন্টারভিউতে পুলিশের কাউন্টার টেররিজমের প্রধান মনিরুল ইসলাম তার তদন্ত কাজের ফলাফল খুঁটিনাটি তুলে ধরে বলেন, দুইটি জঙ্গি গ্রুপ এই হত্যাকাণ্ডগুলি চালিয়ে থাকে। তারা হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবক রিক্রুট করেছে, অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিয়েছে এবং অত:পর এক একজন কমান্ডারের নেতৃত্বে তাদেরকে বিভিন্ন গ্রুপে পাঠিয়ে এই হত্যালীলা পরিচালনা করছে। তারা অত্যন্ত সতর্কভাবে তাদের লক্ষ্য (টার্গেট) নির্দিষ্ট করে যাতে জনমত তাদের পক্ষে থাকে এবং এভাবেই খুনীদের প্রশিক্ষিত টিম গড়ে তোলে। তাদের মূল লক্ষ্য হলো বাংলাদেশের মিশ্রিত ধর্মনিরপেক্ষ ও ইসলামী সংস্কৃতিকে পরিবর্তন করে নিখাদ ইসলাম ধর্মীয় রাষ্ট্রে বাংলাদেশকে পরিণত করা।
বাংলাদেশ সরকার এখানে স্বীকার করেন যে ঐ দুটি জঙ্গি গ্রুপই এগুলি পরিচালনা করছে এবং তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করতে। জঙ্গিদের নেতারা যখন ধরা পড়বেন, তাদের মতে, এই হত্যালীলা ও আক্রমণ বন্ধ হবে। তবে ইসলামী মৌলবাদ যে ইসলামসম্মত নয় তা জনগণকে বুঝিয়ে আনতে হবে।
সরকার এখন বলেছে, উভয় জঙ্গি গ্রুপের মূল নেতাদেরকে তারা চিহ্নিত করতে পেরেছেন- ঐ নেতারাই এই ঘটনাগুলির জন্য দায়ী। পূর্ব ভারতের সংলগ্ন মুসলিম প্রধান রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে ১৯৭১ সালে এবং তখন একটি ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্রে বিশ্বাসী সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু ১৯৭৫ সালে একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সামরিক বাহিনী সমর্থিত সরকার একতা গড়ে প্রায় তিন দশক শাসন কাজ পরিচালনা করে। ঐ সময়েই ইসলামী মৌলবাদের প্রসার ঘটতে শুরু করে। ২০০৯ সালে একটি ধর্ম নিরপেক্ষ সরকার ক্ষমতায় পুনরায় অধিষ্ঠিত হন বিপুল সংখ্যক আসনে বিজয়ী হয়ে শাসন ক্ষমতায় বসেন। তবে ধর্মনিরপেক্ষতা বাংলাদেশের ব্যাপক জনগোষ্ঠির কাছে আজও গ্রহণযোগ্য হয় নি-তাই গোঁড়া ইসলামী সংস্কৃতি প্রবর্তিত হয়েছে। নিউ ইয়র্ক টাইমসের ওই প্রতিবেদনে এমন কথা বলা হয়েছে।
মনিরুল ইসলাম বলেন, উগ্র ধর্মান্ধ জঙ্গিরা ধর্ম নিরপেক্ষ মতবাদকে সমাজে বহুলাংশে হেয় ও অগ্রহণযোগ্য করে তুলতে সক্ষম হয়েছে। তারা ধর্মনিরপেক্ষতার বিশ্বাসী সরকারটিকে আত্নরক্ষামূলক অবস্থানে ফেলতেও সক্ষম হয়েছে। ফলে, একদিকে সরকার হত্যাকাণ্ডগুলির প্রতিবাদ জানাচ্ছে, অপরদিকে লেখকদেরকে ইসলামের বিরুদ্ধে বা তার সমালোচনা করে না লেখার আহবান জানিয়েছে-আহবান জানিয়েছে ‘অস্বাভাবিক মৌনতা’র সমর্থনে কোনো কিছু না বলতে।
এ বিষয়ে ইনষ্টিটিউট অব ল এন্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ এর পরিচালক অবসর প্রাপ্ত মেজর আব্দুর রশীদ বলেছেন, জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান চালালে হত্যালীলা বন্ধ হবে কিন্তু সরকার ততটা এগুতে রাজী না; এই ভেবে যে তার প্রতিকূল প্রতিক্রিয়া হতে পারে। দেশের রাজনীতি এখন দুটি শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়েছে একটি ধর্মনিরপেক্ষ অপরটি ইসলামভিত্তিক। এ কারণেই সরকার অত্যন্ত সতর্ক।
এ বিষয়ে মনিরুল ইসলাম বলেন, যখন মৌলবাদীদের ব্যাপক ক্রিয়াকলাপের বিরুদ্ধে ‘শাহবাগ আন্দোলন’ নামে পরিচিত শক্তিশালী গণআন্দোলন গড়ে তুলতে চেষ্টা করা হয়, জঙ্গিরা তখন ইচ্ছাকৃতভাবেই লোকজনকে হত্যার মধ্য দিয়ে হত্যাভিযান শুরু করে। শাহবাগ আন্দোলন গড়ে ওঠে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির অবসানের দাবীতে এবং ১৯৭১ এর যুদ্ধাপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করার দাবীতে। এই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে যখন বেশ কয়েকজনকে ফাঁসি দেওয়া হলো তখন ইসলামী জঙ্গিরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
উল্লেখ্য, শাহবাগ আন্দোলনটি ২০১৩ সালে গড়ে ওঠে ব্লগারদের নেতৃত্বে।
মনিরুল ইসলাম নিউ ইয়র্ক টাইমসকে বলেন, এই হত্যালীলা চালানোর দায়িত্ব নিয়েছে দুটি জঙ্গি গ্রুপ। এক, আনসার আল ইসলাম- যারা অত্যন্ত ফলপ্রসূ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দুর্ধর্ষ খুনি গড়ে তুলেছে তাদের অপারেশন কমান্ডারদের দ্বারা। এসব কমান্ডারদের নাম প্রকাশে তিনি অবশ্য অস্বীকৃতি জানান; কারণ তাদেরকে কঠিন নজরে রাখা হয়েছে। তবে এদের নেতা বা কমান্ডাররা ২৫ জন প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত খুনি তৈরি করেছে-যাদের কেউ কেউ সাম্প্রতিক ৩/৪টি আক্রমণ পরিচালনা করেছে। দ্বিতীয়ত: জামাতুল মুজাহেদীন বাংলাদেশ-জেএমবি। এদেরকে চিহ্নিত করা হয় ২০০৫ সালে সারা দেশে একই সাথে প্রায় ৫০০ বোমা ফাটিয়ে ছিল সাফল্যের সাথে। এদেরই একটি অংশ এখন অধিকতর সক্রিয়।
সাক্ষাতকারে মনিরুল ইসলাম অবশ্য আরও বলেন যে এই দুটি গ্রুপই দুর্ধর্ষ ইসলামী জঙ্গিগ্রুপ হলেও এরা কেউই আল কায়েদা বা আইএস জাতীয় আন্তর্জাতিক ইসলামী জঙ্গি সংস্থার সাথে সংশ্লিষ্ট নয়। এই গ্রুপ দুটি শাহবাগ আন্দোলনের বিরুদ্ধে ত্বরিত সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং ১৫ ফেব্রুয়ারি তারিখে একজন ব্লগারকে হত্য করে এই অভিযোগ এনে যে তিনি সরাসরি ইসলামে বিরুদ্ধে লিখে থাকেন। তিনি লিখতেন ‘থাবা বাব’ এই ছদ্মনামে। ঢাকার নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির কতিপয় মেধাবী ছাত্র এই নামে লিখতেন এবং তার প্রতিক্রিয়ায় জসীম উদ্দিন রাহমানি নামক ৪৫ বছর বয়স্ক একজন ইসলামী খাদেম ঐ ব্লগারদের হত্যা করার নির্দেশ দেন। অবশ্য জসীম উদ্দিন রাহমানিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অার ৩২ বছর বয়স্ক একই বিশ্ববিদ্যালয়ের অপর একজন ছাত্র রেদোয়ানুল আজাদ, আনসার আল ইসলামের অপর একজন নেতা জুনিয়র ছাত্রদেরকে জসীম উদ্দিন রাহমানির উদ্দীপক বক্তব্য দিয়ে ক্ষেপিয়ে তুলে থাবা বাবা নামের লেখকদেরকে হত্যা করতে উত্তেজিত করে তুলতে থাকে।
ঐ রেদোয়ানুল ইসলামের বক্তব্য ছিল, ‘একজন আল্লাহর অস্তিত্বে বিশ্বাসী হিসেবে তাদেরকে হত্যা করাটা তোমাদের পবিত্র দায়িত্ব।’ আটক হওয়া একজন আদালতে এমন বক্তৃতার কথা স্বীকারও করেছে। সে আদালতে বলেছে, ঐ বক্তব্যে বিশ্বাস স্থাপন করে তারা থাবা বাবাকে হত্যার পরিকল্পনা করে- কারণ থাবা বাবা আল্লাহকে অপমানিত করেছে। আটক ওই জঙ্গির নাম ফয়সাল বিন নঈম (২৪)। সে বলেছে, থাবা বাবার ছবি ফেসবুকে দেখে এবং তখন থেকে তাকে খুঁজতে থাকে এবং এক পর্যায়ে অনুরূপ চেহারার একজননের সন্ধান পায় শাহবাগ আন্দোলনকারীদের মধ্যে। অবশেষে একজন ৩২ বছর বয়স্ক আর্কিটেক্ট-যার নাম আহমেদ রাজীব হায়দার তাকেই থাবা বাবা হিসেবে চিহ্নিত করে। অত:পর রাজীবের দৈনন্দিন কাজের রুটিন অনুসরণ করে শেষ পর্যন্ত একদিন তারা তিনজন মিলে রাজীবের বাড়ীর সামনে রাত্রি প্রায় ৯টার দিকে পেয়ে যায়। নঈম তখন চাপাতি দিয়ে তার মাথার পেছনে, গলায় আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ঐ আকষ্মিক আঘাতের ফলে।
এরপর প্রধান ইসলামী জঙ্গি গ্রুপ হিসেবে আনসার আল ইসলাম প্রচার করতে শুরু করলো যে নাস্তিক ব্লগারদের হত্যাকারীরাই হলো প্রকৃত ইসলাম সেবক। অন্তত: দুটি জাতীয় দৈনিক প্রকাশিত কয়েকটি লেখা তাদেরকে আরও বেশী করে ক্ষুব্ধ করে তোলে এবং পাঠকদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশও এতে ক্ষুব্ধ হন বলে অভিযোগ। এরা শুরুতে শাহবাগ আন্দোলনের সমর্থকও ছিলেন। পরবর্তী দুই মাসে আরও দুইজন ব্লগারকে হত্যা করা হয়। পুলিশ নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সব ছাত্রকে জঙ্গি হিসেবে সক্রিয় ছিল তাদেরকে গ্রেফতার করতে শুরু করে। বিশেষ করে যারা হায়দার হত্যায় জড়িত ছিল। পুলিশ পুনরায় রাহমানিকেও গ্রেফতার করে। এরফলে আনসার আল ইসলাম আরও বেশী হত্যাকাণ্ড পরিচালনা থেকে বিরত হয় এবং এরাই আনসারুল্লাহ বাংলা টিম বলেও পরিচিত। কিন্তু তারা পুনরায় পুনর্গঠিত হয় সন্ত্রাসী সেল এ যার সংখ্যা জানা যায়নি।
মনিরুল ইসমাল বলেন, গত বছর ফেব্রুয়ারিতে আনসার আল ইসলাম অভিজিত রায় নামক আমেরিকা প্রবাসী এক বাংলাদেশী ব্লগারকে ঢাকায় হত্যা করে। অভিজিত রায় আমেরিকাতে একটি বায়োটেকনোলজি ফার্মে দিনে কাজ করতেন এবং রাত্রিতে নানা বিষয়ে বিস্তর লেখালেখি করতেন যার মধ্যে ধর্ম, বিজ্ঞান, সমকামিতা প্রভৃতি ছিল। বিপুল সংখ্যক আনসার আল ইসলাম জঙ্গিকে কারারুদ্ধ করার পর জেলের ভেতর থেকে পুলিশ এক গোপন তথ্যে জানতে পারে যে পুনর্গঠিত আনসার আল ইসলাম তাদের কর্ম কৌশল পরিবর্তন ঘটিয়েছে এবং তারা মাদ্রাসার ছাত্রদেরকে বিপ্লবী করতে মাদ্রাসার ছাত্রদেরকে রিক্রুট করতে শুরু করেছে। মাদ্রাসার শিক্ষকরাও বাদ যাচ্ছেন না। ২০১৩ সালে ব্লগারদের বিরুদ্ধে মাদ্রাসা শিক্ষক ছাত্রদের তীব্র প্রতিবাদ সংগঠিত করতে দেখে তারা তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে রিক্রুটের চাইতে মাদ্রাসাগুলির উপর বেশী গুরুত্ব আরোপ করতে শুরু করে। অত:পর তারা আরও গুরুত্ব দিয়ে আদর্শগত ও অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিতে থাকে অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে।
অভিজিত রায়ের হত্যার এক মাস পরেই ওয়াশিকুর রহমান বাবু (২৭) নামক অপর একজন ব্লগারকে হত্যা করে। তারা একটি এপার্টমেন্ট ভাড়া নিয়ে সেখানে দুইজন সিনিয়র অস্ত্র প্রশিক্ষক থাকতো একটি ভষ্যিতে খুনী হিসেবে প্রশিক্ষণ নেবেন এমন একটি গ্রুপের মাদ্রাসা ছাত্রের সাথে। একজন শিক্ষা দিত কিভাবে চাপাতি দিয়ে আঘাত করলে মানুষ নির্ঘাত খুন হয় এবং কিভাবে পিস্তল ব্যবহার করতে হয় যদি চাপাতি দিয়ে আঘাতের সময় কেউ ছুটে আসে তাকে বাঁচাতে এমন লোকজনদের হটিয়ে দিতে। নিহত ব্লগার আশিকুর রহমান বাবুর ছবি এবং ঠিকানা তাদের হাতে দিয়ে বাবুর বাড়ীর কাছে মহড়া দিতে পাঠানো হতো এটা নির্ধারণ করতে যে; কোন পরিস্থিতিতে কখন নিরাপদে হত্যা করা যেতে পারে। অন্যদিকে বাবুর কিছু সংখ্যক নির্দিষ্ট লেখা পড়িয়ে ঐ প্রশিক্ষণার্থী গ্রুপকে জিজ্ঞেস করা হতো, এই সব ধরণের লেখা যে লেখে তার শাস্তি কি হওয়া উচিত? শিক্ষার্থীরা সমস্বরে জবাব দিত ‘একমাত্র মৃত্যু’।
Moktel H. Mukthi's photo.মনিরুল ইসলাম জানান, পুলিশ এখন এদেরকে ধরার সর্বাত্নক প্রচেষ্টা করছে। সন্দেহভাজনদের ছবিসহ জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় পুলিশের পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপন দিয়ে বলা হয়েছে যে, ‘যারা বা যিনি এদের ধরার ক্ষেত্রে সঠিক তথ্য দিতে পারবে তাকে পাঁচ লক্ষ টাকা পুরষ্কার দেওয়া হবে। অন্য জঙ্গি গ্রুপ জামাতুল মুজাহেদীন বাংলাদেশ-জেএমবি অবশ্য আনসার আল ইসলামের চেয়ে কম সক্রিয়। কতিপয় ভুল পদক্ষেপের কারণে তাদের সমর্থক সংখ্যা কমে গেছে। এই গ্রুপ ৫০ থেকে ১০০ জন মাদ্রাসা ছাত্রকে প্রশিক্ষণ দিয়েছিল খুনী হিসেবে তাদেরকে চারজন করে এক একটি গ্রুপে সংগঠিত করেছিল। কিন্তু এরা এমন ব্যক্তিদের খুন করে ফেলে যারা ব্যাপক সক্রিয় হয়ে ওঠেন। এদের একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অন্যজন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক যিনি দরিদ্র রোগীদের বিনা পয়সায় চিকিৎসা সেবা দিতেন।
যখন হত্যাকারীদেরকে গ্রেফতার করা হলো, তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেল যে তারা ৬৬ বছর বয়স্ক একজন জাপানী নাগরিককে হত্যা করেছে। অথচ ২০১৫ সালেই তাকে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করা হয়েছিল। ফলে এই খুনীরা দ্রুত জনপ্রিয়তা হারায় এবং জনগণ ওই খুনীদেরকে ধরতে পুলিশকে ব্যাপক সহযোগিতাও দেয়। পুলিশ এখন তাদের নেতাদেরকে ধরতে সচেষ্ট। বাংলাদেশে বর্তমানে মানুষ আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন, বলেন মনিরুল ইসলাম।
অনেকে লুকিয়ে আছেন-অনেকে দেশত্যাগী হয়েছেন-আবার অনেকে তাদের দৈনন্দিন রুটিন পরিত্যাগ করে লেখালেখি ছেড়েছেন এবং এমন কি, সন্তানদের স্কুলে আনা নেওয়াও ছেড়েছেন। এই জঙ্গিদের কার্যকলাপের ফলে জাতিকে এই মূল্য দিতে হচ্ছে, বলেন সুধীজনেরা।
নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলামের ইন্টারভিউ নিয়ে লেখাটি হয়তো আগ্রহী পাঠক পাঠিকাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হবে এবং দেশের পরিস্থিতি বুঝতেও কিছুটা সহায়ক হবে। পাবনার আশ্রমসেবক হত্যাকাণ্ড লেখাটি শেষ হতে না হতেই জানলাম, গত ১০ জুন ভোরে পাবনার বিখ্যাত (এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতি সমৃদ্ধ) হেমায়েতপুরের শ্রী শ্রী অনুকূল ঠাকুরের আশ্রমে ৪০ বছর ধরে সেবক হিসেবে কর্মরত ৬২ বছর বয়স্ক নিত্যানন্দ পান্ডেকে ভোর বেলায় নৈমিত্তিক প্রাত:ভ্রমণকালে একই পদ্ধতিতে চাপাতি দিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যাকারীরা আঘাতই শুধু করেনি তার মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়।
আশ্রম কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এই নিত্যরঞ্জনকে হত্যা করা হলো পুলিশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে। কারণ আগের দিন আইজির নেতৃত্বে পুলিশের সিনিয়র কর্মকর্তারা (সম্ভবত: চট্টগ্রামের এসপির স্ত্রী হত্যার পটভূমিতে) সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো ঐ দিন রাত ১২টা এক মিনিট থেকেই জঙ্গি-সন্ত্রাসী ধরার জন্য দেশব্যাপী সমন্বিত সপ্তাহব্যাপী অভিযান শুরু করবে এবং তা করাও হয়। ওই অভিযান শুরুর মাত্র ৬-৭ ঘণ্টা মধ্যেই এবং পবিত্র রমজানের শুরুতেই হেমায়েতপুর আশ্রমের নিষ্ঠাবান সেবক নিত্যানন্দ পান্ডেকে নির্মমভাবে আশ্রমের নিকটেই খুন করা হলো। আমি শোকাহত। আমরা সমগ্র জাতি শোকাহত। গোটা পৃথিবী উদ্বিগ্ন আজকের বাংলাদেশ নিয়ে।
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)

MukthizCreation

SUPPORT AWAMI LEAGUE, VOTE NOUKA ONCE AGAIN
তারেক খালেদা ফালু দুদু মীর্জা আব্বাস সাদেক হোসেন খোকা ইউনুস এরা চোর কি ভাল? এ জাতীয় জরিপ করে সময় নষ্ট না করে আমার মনে হয় আওয়ামী লীগের প্রচারের দিকে গুরুত্ব দিলে বেশী লাভবান হবো।
মাননীয় নেত্রী এবং সজীব ওয়াজেদ জয়ও সেদিকেই গুরুত্ব দিয়ে বলেছেন যে আওয়ামী লীগ যতটা কাজ করে তার এক ত্রিতিয়াংশও প্রচার হয়না; যেটূকু হয়, সেটূকু ঢাকা পরে যায় বি এন পি জামাত শিবিরের অপপ্রচারের কারনে। সকলের নিকট তাই প্রত্যাশা আরো অনেক বড় কিছু। প্লিজ সবাই দলীয় প্রচার করুন; অন্যের দুর্নামের চেয়ে নিজ দলের প্রশংসা করে সময় নষ্ট করি। যাতে আগামী ২০১৯ এর নির্বাচনে নৌকার স্বপক্ষে কিছুটা হলেও কাজে লাগে। জনমত গড়ে তোলার কাজে আমরা ঐকান্তিক আগ্রহ নিয়ে ঝাপিয়ে পড়লে কেন সফল হব না? আমি যদি এই ৬৫ বছর বয়সে প্রতিদিন আওয়ামী লীগ কে ৮ থেকে ১০ ঘন্টা দিতে পারি, আপনারা কি প্রতিদিন ১ থেকে দুই ঘন্টা দিতে পারেন না? পারেন। কিন্তু কেউ কেউ দেখছি অযথা একটি অহেতুক / অবান্তর বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে নিজের সময়ের টুটি চেপে ধরেন এবং বন্ধুদেরকেও সে কাজে আগ্রহী করে তোলেন।
কেউ ভুল বুঝবার কিছু নেই; আমি এমনই বিগত ১৭ বছর ধরে ফেচবুকে নিজের খাই আওয়ামী লীগের মোষ তাড়াই।
মোকতেল হোসেন মুক্তি
মুক্তিযোদ্ধা
জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।
















 Our great two sisters, the pride daughter of Bangabandhu.
আমাদের হাসু আপা ও তাঁর স্নেহের রেহানা। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট জাতিরজনকের পরিবারের ১৮জন সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়; মহান আল্লাহর অশেষ করুনা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা দেশের বাইরে থাকার কারনে আজ বাঙ্গালী জাতি একজন সফল দীপ্ত দৃঢ় প্রত্যয় ও মনোবলের একজন রাষ্ট্রনায়ক পেয়েছি। আমরা এই দুই এতিম বোনের সুদীর্ঘ আয়ূ ও সুশাস্থ্য কামনা করি। তাদের উপর আল্লাহর বিশেষ রহমত নাজিল হোক; সকল বিপদ আপদ দুর্নাম থেকে আল্লাহ যেনো রক্ষা করেন।
জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু ।